নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বুধবার চট্টগ্রাম নগরের সার্কিট হাউজে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের বলেন, “আরাকান আর্মি অনেকদিন যাবৎ যুদ্ধ করছে। এদের অনেকে এই পাড়ে (বাংলাদেশ অংশে) বিয়েও করেছে। এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। তবে যে হারে ভিডিওতে এসেছে সেটি সঠিক নয়। টিকটকের ভিডিও অনেকভাবে করা যায়। কিন্তু সব যে সত্যি তাও না। আবার সব যে মিথ্যা তাও না।”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও যোগ করে বলেন, “আরাকান বর্ডার ইজ ডিফিকাল্ট বর্ডার। আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি কিন্তু ওদের বর্ডার তো আরাকান আর্মি দখল করে আছে। এখন মিয়ানমার থেকে কিছু আমদানি-রপ্তানি করতে হলে মিয়ানমার সরকারকে ট্যাক্স দিতে হয়। আবার আরাকান আর্মিও পয়সা নেয়। এক্ষেত্রে একটি সমস্যা আছে। এটা আপনাদের বুঝতে হবে। সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে।”
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণ ও পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন সন্ত্রাসী তৎপরতা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আমি পাহাড়ে তিনবার চাকরি করেছি। ক্যাম্প কমান্ডার ছিলাম, সিইও ছিলাম এবং বিগ্রেড কমান্ডার ছিলাম। পাহাড়ের অশান্ত অবস্থা তো আপনারা দেখেননি। ওই তুলনা করতে গেলে পাহাড় পুরোটা শান্ত। ছোটখাটো অপহরণ তো সমতলেও হচ্ছে। খালি পাহাড়কে কেন দোষ দেন? পাহাড় আগের থেকে অনেক ভালো অবস্থায় আছে। অনেক শান্ত আছে। আমি বাঘাইহাটে ছিলাম। বাঘাইহাটে ল্যান্ডমাইন দিয়ে সৈন্যবোঝাই পিকআপ উড়াই দিছে। সেসময় খবরগুলো আসেওনি। ওই এলাকায় যাতায়াতের সুবিধাও ছিল না। এখন পাহাড়ের অবস্থা এত ভালো ওই রাস্তা দিয়ে আপনারা সাজেক চলে যাচ্ছেন। পর্যটকরা সাজেক চলে যাচ্ছে।”
চট্টগ্রামের রাউজানে খুনোখুনি প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এখানকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এখানে কীভাবে কী করা যায় তা আলোচনায় উঠে এসেছে। অনেক সময় সন্ত্রাসীরা অপকর্ম করে পাহাড়ের দিকে চলে যায়।
তখন এক সাংবাদিক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে জানান, হত্যাকান্ডে জড়িতরা প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরছে। জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যদি এলাকায় থাকে এখনই রেঞ্জ ডিআইজিকে নির্দেশ দিয়ে গেলাম। তাদের বিষয়ে যেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়।
যৌথ বাহিনীর অভিযান কমে গেছে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যৌথবাহিনীর অভিযান কোনো অবস্থায় কমেনি। অভিযানের কারণে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। যে ঘটনা ঘটে সত্যটা আপনারা অবশ্যই প্রকাশ করে দিবেন। এতে আমাদের কাজ করতে সুবিধা হয়। অনেকে ঘটনার সত্যটা প্রকাশ করে না। তদন্ত করে দেখা যায়, ঘটনাটা সত্য না। এতে অসুবিধা হয়।