নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় নাছির শেখ (৪৮) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীকে হত্যার জেরে প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে ভাঙচুর, লুটপাট ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হুমকিতে এলাকাছাড়া হয়েছে আসামিপক্ষের নারী-পুরুষ ও শিশু।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত রোববার বিকেল ৫টার দিকে নিহতের ভাই সেলিম শেখ (৪০) ও মিন্টু শেখ (৩২) এবং মোঃ শাহীন (৪১), মৃদুল (২৩)সহ ২০/৩০ জন লোক তিনটি ঘর ও একটি পাকাঘরে ভাঙচুর চালায়। এসময় প্রায় ২২ ভরি অলংকার, একটি মোটরসাইকেলসহ নগদ ৪ লাখ টাকা ও মালামাল লুট করা হয়। এতে পরিবারটির প্রায় ৪০ লাখ টাকার ক্ষতির হয়েছে। এছাড়াও জায়গা-জমির কাগজপত্র নিয়ে গেছে হামলাকারীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিরাজদিখান উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের মালামত গ্রামের প্রয়াত সামাদ শেখের পুত্র মাছ ব্যবসায়ী নাছির শেখ (৪৮)কে গত ২৪ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হয়। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, নাছির শেখ এলাকায় মাছ, জমি-জমার বেচাকেনার কাজ করতেন। আমাদের একজন আত্মীয়ের জমি নিয়ে তার সাথে ঝামেলা রয়েছে। আমাদের অনেক এলাকাবাসী বলেছে, তাকে মারার সময় ঐখানে মাইক্রোবাস ছিলো। দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে পালিয়েছে। বাবু শেখ মালখানগর চৌরাস্তা এলাকা থেকে আসার সময় তার মুখোমুখি পড়ে। নাছির শেখ মালখানগর ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য ছিলেন। সাবেক এমপির আস্থাভাজন লোক থাকায় বিভিন্ন লোকজনের ঝামেলার জায়গা-জমি বেচাকেনা করতেন। আমাদের পরিবারকে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবী করেন তারা। এদিকে, বাবু শেখের পিতা নুর মোহাম্মদ শেখ (৭০) বলেন, আমার ছেলে বাবু শেখ সিঙ্গাপুর প্রবাসী। একমাসের বেশি সময় ছুটিতে এসেছে। আমাদের ছেলেদের এলাকায় হত্যা মামলায় ফাঁসাতে চাচ্ছেন তারা। ওরা কখনোই মারামারি করেনাই। আমার পাঁচ ছেলেই বিদেশে থাকে। ছোট ছেলেটি কলেজে পড়ে। আমার বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট এবং হুমকি দিচ্ছে তারা। আমার পরিবারের ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমি নিজেও এ হত্যার বিচার চাই। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন তদন্ত করে প্রকৃত আসামিদের খুঁজে বের করুক।
অপরদিকে, নিহত নাছির শেখের ছোট ভাই মিন্টু শেখ (৩২) বলেন, গুলিবিদ্ধর পর আমার ভাই মারা যাওয়ার আগে বাবু, নয়ন ও জাকিরের নাম বলে গেছে। ভাইয়ের সাথে জমিসংক্রান্ত বিষয়ে কথা হতো। তবে তিনি বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও লুটপাটের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমার ভাই মারা যাওয়ার পরপরই আমরা এ কাজ করতে পারতাম। রোববার ভাইকে দাফন করার পর আমরা থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করি।
সিরাজদিখান থানার (ওসি) মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, নিহতের ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে একটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে। প্রতিপক্ষের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে কিনা জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে জানা যাবে আসলে কি ঘটেছে।