নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জে রজতরেখা নদীর প্রবাহ ফেরাতে স্বেচ্ছাশ্রমে খনন শুরু হয়েছে। ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ৪৮০ ফুট প্রশস্ত ঐতিহ্যবাহী নদীটিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। এতে অংশ নিচ্ছে তিন শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী। সাথে রয়েছে স্ক্যাভেটর। রজতরেখা নদীর প্রবাহ ফেরাতে খননযজ্ঞ শুরু হয়েছে। এই অঞ্চলের প্রাণ ঐতিহ্যবাহী নদী রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে মানুষ। স্ক্যাভেটরের পাশাপাশি কোদাল-শাবল নিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে খনন কাজে অংশ নিচ্ছেন স্থানীয়রা। জেলা প্রশাসনের ডাকে সাড়া দিয়ে মৃতপ্রায় রজতরেখাকে বাঁচাতে রোভার স্কাউটস, স্কাউটস, বিএনসিসি, যুব রেডক্রিসেন্টস, বিডি ক্লিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করে যাচ্ছেন।
মুন্সীগঞ্জের দীঘিরপাড় বাজার সংলগ্ন শিলইয়ে পূর্বরাখিতে আঁড়াআঁড়ি বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করায় অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়ে নদীটি। জেলা প্রশাসক মোঃ আবুজাফর রিপন বিপিএএ গত সোমবার পরিদর্শন করে মঙ্গলবার তা অপসারণ করে দেন। কিন্তু দুই পাড় থেকে দখল প্রতিযোগিতা এবং ময়লা-আবর্জনায় রজতরেখায় পানি ধারণ করতে পারছিল না। তাই গত বুধবার লাল নিশান টাঙ্গিয়ে চিহ্নিত করার পর পদ্মার সাথে সংযুক্ত স্থান থেকেই গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শুরু হয় এই খনন। এই খনন কাজের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোঃ আবুজাফর রিপন বিপিএএ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোঃ আশরাফুল আলম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আনিছুজ্জামান আনিস, টঙ্গীবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আরিফুল ইসলাম হালদার এবং মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফিফা খান। সবার আশা, দুই দশক পরে আবার নদীটি ফিরবে আগের জায়গায়। যার সুফল ছড়িয়ে পড়বে চারিদিকে।
নদীটির এই করুণ অবস্থায় নৌ যোগাযোগ বন্ধ ছাড়াও মুন্সীগঞ্জ সদর ও টঙ্গীবাড়ী এই দুই উপজেলার বিস্তীর্ণ জমির আলুসহ অন্যান্য চাষাবাদের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। জমির উর্বরতা হ্রাস, পানি নামতে দেরি হওয়ায় ফসল রোপণে বিলম্ব। আর বৃষ্টিতে জমিগুলোতে জলাবদ্ধতায় ফসলের ক্ষতি হচ্ছিল। পদ্মা থেকে ধলেশ্বরী পর্যন্ত প্রবাহিত এই নদী আলদি-মাকহাটি এলাকায় কাজলরেখা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে।