নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিকান্দার ঘরামী (৭২) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যুর খবরে জন্মের ২৪ বছর পর না দেখা পিতার মুখ খুঁজে পেল মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার পাংগাশিয়া গ্রামের সহজ সরল যুবক মোঃ মিলন (২৪)।
জানা যায়, গত বুধবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। আত্মীয়স্বজনহীন এই মানুষটির লাশ দাফন কাফন নিয়ে ঝামেলায় পড়েন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে দেখতে পান গত ১৯ জুন অসুস্থতাজনিত কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্থানীয় এক সংবাদকর্মী।
ঐ সংবাদকর্মী জানান, ২৪ বছর পূর্বে থেকে সিকান্দার আলী গজারিয়া, মতলব, দাউদকান্দী এলাকার বিভিন্ন মাজারে ঘুরে ঘুরে জীবনযাপন করেছেন। একাধিক মানুষ উনাকে চিনেন এই অঞ্চলের মানুষ হিসেবে। কিন্তু তার স্বজনদের বিষয়ে কেউ কিছু জানে না। বাউশিয়া ইউনিয়নের মধ্য বাউশিয়ার বউ মস্তানের মাজার, পুরান বাউশিয়ার সোলায়মান লেংটার দরবার, নয়াকান্দীস্থ এক পাগলের মাজার ও সর্বশেষ গত ক’মাস যাবৎ বড় রায়পাড়াস্থ শামছু পাগলার দরবারে ভবঘুরে জীবনযাপন করছিল সে। গত ১০/১২ দিন পূর্বে শারীরিক দুর্বলতায় অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্বজনহীন মানুষটির চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তি করার সময় তিনি নিজেই রেজিস্ট্রার খাতায় নিজের নাম, ঠিকানা বলে যান। ইতিমধ্যে ব্যক্তিগতভাবে লোকটির ঠিকানা অনুযায়ী খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু সেভাবে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তার মৃত্যুর পর গজারিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাজিব খাঁনের আন্তরিক চেষ্টায় তার পরিবারের খোঁজ পাওয়া যায়। পরে রাত ৯টায় মৃতের একমাত্র ছেলে, যিনি জন্মের পর বাবাকে চোখে দেখে নাই, বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে সেটাই জানা ছিল না মৃত বাবাকে পেয়েও এই সময় মোঃ মিলন ঘরামী বলেন, বুঝের হওয়ার পর থেকে বাবাকে খুঁজে ফিরেছি কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাবাকে পেলাম, মৃত বাবার মুখখানি দেখলাম, সান্ত্বনা তো রইল, বাবাকে নিজ হাতে দাফন করতে পারলাম।
এ বিষয়ে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাজিব খাঁন বলেন, ঘটনাটা শুনে অনেক খারাপ লেগেছে। আর আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি মাত্র।