নিজস্ব প্রতিবেদক
গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সড়ক নির্মাণ কাজের তিনটি কার্যালয়ের কোনো শাখা মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় নেই। এ কারণে গজারিয়া উপজেলার মানুষ ও শিল্প-কারখানার মালিকদের পার্শ্ববর্তী নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা জেলার ওপর নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। তিনটি জনগুরুত্বপূর্ণ সমস্যার কার্যালয় বা প্রতিষ্ঠান পাশের জেলায় হওয়ায় গজারিয়ার প্রশাসন, শিল্প-কারখানার মালিক ও সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ ও বঞ্চনার শিকার হতে হচ্ছে। এলাকাবাসী জানান, তাদের উপজেলার বাসিন্দা ও শিল্প-কলকারখানার মালিকদের গ্যাস-সংযোগ নিতে হলে বা এক্ষেত্রে কোনো সমস্যা দেখা দিলে যেতে হয় পাশের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায়। আর বিদ্যুতের জন্য যেতে হয় কুমিল্লার চান্দিনায়। সড়কের সমস্যার জন্য যেতে হয় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সড়ক ও জনপথের (সওজ) কার্যালয়ে। এলাকাবাসী ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ভৌগলিক অবস্থানের দিক দিয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা সদরের পূর্ব পাশে মেঘনা নদীর তীরে আটটি ইউনিয়ন ও পৌনে দুই লাখ মানুষ নিয়ে গজারিয়া উপজেলার অবস্থান। এছাড়া ঢাকার কাছের উপজেলা এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও নৌপথ উভয় সুযোগ-সুবিধা থাকায় এখানে বড় বড় শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে। রয়েছে সিমেন্ট ও কাগজ নির্মাণ কারখানা, জাহাজ নির্মাণ কারখানাসহ অনেক ছোট-বড় শিল্প-কারখানা। ব্যবসায়ী জামালউদ্দিন বলেন, আমরা ভোট দিয়ে এখানে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করি, যাতে তারা আমাদের গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সড়ক নির্মাণ করে এলাকার উন্নয়ন করেন। কিন্তু উপজেলার উন্নয়নের এসব প্রতিষ্ঠান তো আমাদের জেলাতেই নেই। জনপ্রতিনিধিরা আমাদের কাছে এ অজুহাত দেখিয়ে পার পেয়ে যান। ভবেরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা ইসরাফিল বলেন, গজারিয়া উপজেলার যেসকল জায়গায় সড়ক ও জনপথের সড়ক রয়েছে সেসকল সড়ক মেরামতের প্রয়োজন হলে সিদ্ধিরগঞ্জে যেতে হয়। গ্যাসের কার্যালয় না থাকায় যেকোন জটিলতা দেখা দিলে অন্য উপজেলার উপর নির্ভর করতে হয়। গজারিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বলেন, আমরা মুন্সীগঞ্জ জেলায় বাস করি। অথচ আমাদের উপজেলার মানুষকে গ্যাস ও বিদ্যুতের মতো বিভিন্ন সেবা পেতে যেতে হয় অন্য জেলায়। জনপ্রতিনিধি হিসেবে এটা আমাদের জন্য খুবই লজ্জাজনক। এ বিষয়ে আমি জেলার উন্নয়ন সমন্বয় সভায় বহুবার বলেছি। এ বিষয়ে সমস্যা দেখা দিলে জেলার উন্নয়ন সমন্বয় সভায় বললেও কোনো কাজ হয় না। কারণ ওই সভায় এসব সমস্যা-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকেন না। তাদের অফিস অন্য জেলায়। তারা নিজ নিজ জেলার উন্নয়ন সমন্বয় সভায় উপস্থিত থাকেন।