নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে অর্ধশতাধিক রমরমা অবৈধ ড্রেজার বাণিজ্য। অজ্ঞাত কারণে প্রশাসন নিরব ভূমিকায়। এতে করে এ উপজেলায় তিন ফসলি জমি দিন দিন কমে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পাশের ফসলি জমিগুলো। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী উপজেলা প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ জানালেও, থেমে নেই মাটিখেঁকোদের কর্মযজ্ঞ।
গত ২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরেজমিনে গিয়ে মালখানগর ইউনিয়নে ৬টি ড্রেজার ব্যবসায়ীকে হুঁশিয়ারি করে দেন। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ড্রেজার ও পাইপ সরিয়ে নিতে বললেও একদিন বন্ধ রাখার পর সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ ড্রেজার বাণিজ্য।
গতকাল বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মালখানগর ইউনিয়নে এখনো ড্রেজার দিয়ে চলছে তিন ফসলি জমি ভরাট ও মজুদ বাণিজ্য। এছাড়া তালতলা-ডহুরি খালে বাল্কহেড চলাচল নিষিদ্ধ থাকলেও চলছে দেদারছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে ভোররাত পর্যন্ত এগুলোর চলাচল সবচেয়ে বেশি। এতে করে আশেপাশের নদীর পাড়ের বসতি বাড়িও ভেঙে যাচ্ছে।
জানা গেছে, মালখানগর ডিগ্রি কলেজের উত্তরপাশের ড্রেজার পরিচালনা করছে লালন দেওয়ান, মির্জা মাসুম, আব্দুল আহাদ খান, বাড়ৈপাড়া গ্রামের ইউপি সদস্য সুরুজ্জামাল। নাইশিং গ্রামে বালু দিয়ে জমি ভরাট করছে ইউপি সদস্য সায়েম সিকদার। নদী ও খালের মধ্যে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে সরকারি মাটি চুরি করে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের নাটেশ্বর গ্রামের আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে ফসলি জমি নষ্ট করছে। কিন্তু বালু উত্তোলনকারী ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না কেউ। তবে ২/৪ মাসে প্রশাসন বিভিন্ন স্থানে কয়েকবার অভিযান চালিয়ে ড্রেজার বন্ধ করলেও পুনরায় আবার ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছেন তারা।
নাটেশ্বর জেলেপাড়ার বাসিন্দারা জানান, প্রতিবছর এই খালে বড় ট্রলার ও বাল্কহেড চলাচল করায় আমাদের বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে যাচ্ছে। প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানালেও নেয় না কোন কঠোর ব্যবস্থা।
বিষয়টি এখনই নজর না দিলে ভবিষ্যতে ফসলি জমিগুলো হারিয়ে যাবে। বিলীন হবে নদীর পাড়ের শতাধিক বাড়িঘর।
সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাব্বির আহমেদ বলেন, তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছিল। তারা না মেনে আবার চালু করেছে। এখন প্রশাসন নিজ উদ্যোগ নিয়ে অপসারণ করবে ড্রেজার ও পাইপ।
সিরাজদিখানে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে রমরমা অবৈধ ড্রেজার বাণিজ্য
আগের পোস্ট