নিজস্ব প্রতিবেদক
শ্রীনগরের খামারীদের গরু হাটে। ইতিমধ্যেই শ্রীনগরের কোরবানীর পশুর হাটগুলো জমতে শুরু করেছে। কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার বারবাজার, দেউলভোগ বাজারে কোরবানীর পশু প্রস্তুত করা হচ্ছে। সেইসাথে সাধারণ ক্রেতাদেরও ভিড় করতে দেখা যাচ্ছে। কোরবানীর ঈদের গরু ও ছাগল কেনাবেচা শুরু হয়েছে। আবার খামারগুলোতে চলছে পশু হৃষ্টপুষ্টকরণের কাজ। দেশি ও প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছেন তারা। অনেক খামারি কোরবানি ঈদে গরু বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা লাভ করার আশা করছেন। মোটাতাজাকরণের বিষয়ে খামারি বাদে ও গ্রাম এলাকায় অনেকে বাড়তি লাভের আশায় একের অধিক গরু ও ছাগল পালন করে থাকে। তারা বিভিন্ন মেডিসিন খাইয়ে মোটাতাজা করছেন ক্রেতাদের কাছ থেকে ভাল দাম পাবার জন্য। একেকটি বড় খামারে ২০ থেকে ৫০টি গরু এবং ছোট খামারে ৫ থেকে ২০টি গরু মোটাতাজা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই এসব খামার থেকে গরু বিক্রি শুরু হয়েছে। উপজেলার খামারগুলোতে স্থানীয় জাতের পাশাপাশি মোটাতাজা করা হচ্ছে নেপালি, হরিয়ানা, সিন্ধি, শাহীওয়াল জাতের গরু। খামারী সোহাগ আহম্মেদ জানায়, গত বছর ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকায় এক একটি গরু কিনে চার থেকে ছয় মাস লালন-পালন করে দুটি দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করেছিলেন। মোটাতাজা করে অনেক ভাল দামে বিক্রি করতে পেরেছিলেন। এসব গরু মোটাতাজা করতে কোন ওষুধ বা ইঞ্জেকশন দেয়া হয় না। উপজেলার প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, খামারগুলোতে নজরদারী রাখা হচ্ছে যাতে করে কেমিক্যালের মাধ্যমে কোরবানির পশু মোটাতাজা করা না হয়। খামারীদের দাবি, দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে কোরবানির পশু রয়েছে। কোরবানি উপলক্ষে ভারত বা অন্য কোন দেশ থেকে যদি পশু আমদানি করা হয় তাহলে হুমকির মুখে পড়বে দেশীয় খামারীরা। এ বছরও সমপরিমাণ কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে। চাহিদার অনুপাতে পর্যাপ্ত কোরবানির পশু মজুদ রয়েছে খামারিদের কাছে। কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করা গবাদী পশুগুলোকে ঘাস, খড়, খৈল, ভুষিসহ দেশীয় খাবারের মাধ্যমে হৃষ্টপুষ্ট করা হচ্ছে। অনেকে খামারী না হয়েও নিজ বাড়িতে ২/৪ টা গরু লালনপালন করে থাকে এবং বিভিন্ন মোটাতাজাকরণের ট্যাবলেট খাওয়ায়। এসব ট্যাবলেট খাওয়ালে গরু ফুলে যায় দেখলে মনে হয় অনেক মাংস হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ক্রয়ের সময় যে টার্গেট নিয়ে কোরবানি দেওয়া হয় সে পরিমাণ মাংস হয় না। অবশ্য এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।
খামারীরা জানান, কোরবানীর ঈদ যতই ঘনিয়ে আসবে ততই দেউলভোগ এলাকার পশুর হাটগুলোতে গরু কেনাবেচা জমে উঠতে শুরু করবে। তাই গরু মোটাতাজা করতে খামারীদের ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে। খামারীরা তাদের গরু বিক্রি করতে শুরু করেছে। আবার কেউ কোরবানি ঈদ সামনে করে বিক্রি করবে বেশি দামের আশায়। দেশীয় ছোট গরু কিনে বিভিন্ন পদ্ধতিতে মোটাতাজা করে থাকে। ক্রেতারা বলছে, এ বছর গরুর দাম এখনই অনেক বেশি। সামনে আরও বেশি হবে এমন আশঙ্কা করছে। অন্যদিকে গরু মোটাতাজাকরণের নিষিদ্ধ ওষুধ প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে ওষুধের ফার্মেসি থেকে শুরু করে হাট-বাজারে। সহজলভ্য হওয়ার সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন অসাধুরা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওষুধ খাওয়ানো গরুর মাংস খেলে মানুষের শরীরে নানা ধরনের রোগ ঢুকে। এতে কিডনির সমস্যাসহ নানান জটিল রোগে আক্রান্তের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ধরনের ওষুধ খেয়ে গরুগুলো রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে মোটাতাজার বিপরীতে অনেক গরুর মৃত্যু হচ্ছে। এতে লাভের তুলনায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন অনেক খামারী। অনেকে বাংলাদেশি ভিটামিন খাইয়ে মোটাতাজা করছে। আবার কেউ ভারতীয় ওষুধ দিয়ে মোটাতাজা করছে।