মোহাম্মদ আরফিন
সারাদেশে চলছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় বড় উৎসব শারদীয় দূর্গোৎসবের প্রস্তুতির শেষ মুহুর্ত। পূজা মন্ডপে মূর্তি নির্মাণের কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। এখর রং তুলির আঁচড় ও সাজসজ্জার কাজ চলছে। আগামীকাল ২০ অক্টোবর মহালয়ার মাধ্যমে শুরু হবে হিন্দু সম্প্রদায়ের এই ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গোৎসব। দৈনিক মুন্সীগঞ্জের কাগজের পক্ষ থেকে এই শারদীয় দূর্গোৎসবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভক্তদের জানাই শুভেচ্ছা।
এবার সারাদেশে ৩২ হাজার ৪০৮টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। গতবছরের তুলনায় এবার ২৪০টি পূজামন্ডপ বেড়েছে। পাঁচদিনব্যাপী এই শারদীয় দূর্গোৎসবে এবার মুন্সীগঞ্জ জেলার ৬টি উপজেলায় ১২৭টি পূজামন্ডপে এই শারদীয় দূর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই দূর্গোৎসব।
আমরা জানি, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। তাই প্রতিটি উৎসবে সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে বলে আমরা মনে করি না। এই শারদীয় দূর্গোৎসব শান্তিপূর্ণভাবে পালনের মাধ্যমে সম্প্রীতির বন্ধন তৈরী হবে এবারও সেই প্রত্যাশাই আমাদের।
মুন্সীগঞ্জে শারদীয় দূর্গোৎসব শান্তিপূর্ণভাবে পালনে প্রশাসনসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। প্রতিটি মন্ডপে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। এই দূর্গোৎসবে যাতে করে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে সকলের। সনাতন ধর্মাবলম্বী প্রতিটি মানুষ যাতে আনন্দ উৎসবের মাধ্যমে এই শারদীয় দূর্গোৎসবে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায় সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। আর সেই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে দায়িত্বশীল প্রতিটি মানুষকে।
এই দূর্গোৎসবে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পর্ব রয়েছে। আর তা হচ্ছে মহালয়া, বোধন ও সন্ধি পূজা। আমরা চাই, হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন পূজার প্রতিটি পর্বই যেন আনন্দ উৎসবের মাধ্যমে পালন করে ধর্মীয় সম্প্রীতির বন্ধনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া বাংলাদেশে প্রতিটি ধর্মের মানুষ তাদের ধর্মীয় উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে পালন করে থাকে। এবারও এই শারদীয় দূর্গোৎসবে ব্যতিক্রম কিছু হবে না এমনটাই প্রত্যাশা আমাদের।
মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশে প্রতিটি সম্প্রদায়ের মানুষই তাদের ধর্মীয় উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে এবং আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে পালনের মাধ্যমে নজির স্থাপন করেছে। সারাদেশের ন্যায় মুন্সীগঞ্জের ৬টি উপজেলায় তেমনিভাবে এবার শারদীয় দূর্গোৎসবে ধর্মীয় সম্প্রীতির বন্ধন তৈরী করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে সেই বিশ্বাস ও প্রত্যাশা আমাদের রয়েছে।
আমরা জানি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল শান্তিপ্রিয় মানুষের আবাসভূমি হচ্ছে বাংলাদেশ। মনে রাখতে হবে, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। এই শ্লোগানকে উজ্জীবিত করে বরাবরের মতো এবারও মুন্সীগঞ্জে আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে শারদীয় দূর্গোৎসব পালিত হবে। বাংলাদেশের সংবিধানে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। আর বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন। সেটা প্রতিবারের ন্যায় এবারও শারদীয় দূর্গোৎসবে মুন্সীগঞ্জের মানুষ রক্ষা করবে, সম্প্রীতির বন্ধন অটুট থাকবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।