নিজস্ব প্রতিবেদক : মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মেদেনীমন্ডল ইউনিয়নের কান্দিপাড়া গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, বসতবাড়ি ভাঙচুর ও গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। তবে গুরুতর জখম বা আহত হওয়ার মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। এ বিষয় নিয়ে উভয়পক্ষ দায় অস্বীকার করেছেন। তবে স্থানীয় এলাকাবাসীর ভিতরে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত শনিবার রাতে উপজেলার মেদেনীমন্ডল ইউনিয়নের কান্দিপাড়া মাঠে ও তালুকদার বাড়ির পাশে এই ঘটনা ঘটেছে।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, গত রাতে ছাত্রদলের নেতাকে ধাক্কা দেওয়াকে কেন্দ্র করে হঠাৎ করে হইচই ও গুলি বর্ষণের শব্দ শুনতে পায়। ঘর থেকে বাইরে এসে দেখে, মানুষজন ছোটাছুটি করছে। কিছু মানুষের হইচই ও গলার শব্দ শোনা যায়। তখন সবাই ভয় পেয়ে ঘরে গিয়ে বসে থাকে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
তারা জানান, আমরা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, রাতে আল-আমিন খান ও আওলাদ হোসেন খান দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এছাড়া আমরা গুলি বর্ষণের শব্দ পেয়েছি। পরে জানতে পেরেছি, শহীদ নামে আওয়ামী যুবলীগ এক নেতার বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। অনেকের কাছে শুনেছি, তার কাছে নাকি অস্ত্র আছে। সে নাকি গুলি করেছে। শুভেল নামে আরো একজনের কাছে এলাকাবাসী অস্ত্র দেখতে পায়। শহীদ ও শুভেল দুজনই বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলে গিয়েছিল কয়েকবার।
এ বিষয়ে জানতে মোঃ আওলাদ হোসেন খানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আল-আমিন খান তার লোকজন নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা করে। আমার ছেলেকে ধাওয়া দেয়। হঠাৎ বাড়িতে গিয়ে দেখতে পাই, আমার পরিবারের লোকজন ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে ভয়ে কাঁদছে। পরে আমি লোকজন নিয়ে কান্দিপাড়া মাঠের দিকে যাই। তখন তারা গুলি বর্ষণ করে। আমরা বাড়িতে চলে আসি। এই সুযোগে তারা আমার প্রতিবেশীদের বাড়িতে ভাঙচুর করে। তারা ৪০ থেকে ৫০ জন লোক নিয়ে হামলা চালায়। কয়েকজনের কাছে বন্দুক ছিল, গুলি বর্ষণ করেছে। ঘটনাস্থলে গুলি পাওয়া গেছে। তারা ক্ষমতার দাপট দেখায়। কিছু হলেই লোকজন নিয়ে বাড়িতে এসে হামলা করার চেষ্টা করে। এলাকায় চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে তারা লিপ্ত রয়েছে।
মোঃ আল-আমিন খান জানান, আওলাদ হোসেন খানের সাথে আমার কোন রকম শত্রুতা নেই। আমার সাথে গতকাল কোন ঘটনা ঘটেনি। আওলাদ বিএনপির শ্রমিক দলনেতা। সে যুবলীগ, ছাত্রলীগ নিয়ে নিজের দল ভারি করার চেষ্টা করেছে। শহীদ ও শুভেল আওয়ামী লীগের লোক। তাদের কাছে অবৈধ অস্ত্র আছে, যা দিয়ে তারা গতকাল গুলি বর্ষণের মত ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েছি। আমাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ ও ভিডিও ফুটেজ রয়েছে।
পদ্মা উত্তর থানা অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ জাকির হোসেন জানান, এখন পর্যন্ত আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। দ্বিতীয় পক্ষও অভিযোগ করতে এসেছিল। সমস্ত ঘটনা আমরা তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। ঘটনাস্থল থেকে আমরা দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছি। কোস্টগার্ডের সদস্যরাও কিছু গুলি উদ্ধার করেছে।