তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক : স্মার্টফোনের মধ্যে অ্যাপলের আইফোন সবচেয়ে জনপ্রিয়। অন্যান্য ফোনের চেয়ে দাম বেশি হওয়ায় অনেকেই মজা করে বলতেন, ‘কিডনি বেচে আইফোন কিনতে হয়’। তবে এখন মনে হচ্ছে একটি নয়, দুটো কিডনি বেচে কিনতে হতে পারে আইফোন। আইফোনের দাম হতে পারে আকাশছোঁয়া।
ট্রাম্পের বাড়তি শুল্কনীতির প্রভাব পড়তে পারে আইফোনের বাজারে, এমনইটাই মনে করছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। আগে অ্যাপল এই ট্যারিফ থেকে ছাড় পেত, কিন্তু এবার তা হয়নি। ফলে সাধারণ মানুষের জন্য আইফোন কেনা আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
মনে হচ্ছে, বাণিজ্য যুদ্ধ অস্ত্র প্রতিযোগিতায় পরিণত হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন, যা চীনা আমদানির দাম দ্বিগুণ করে দিতে পারে।
ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ প্রভাব ফেলবে আইফোনের বাজারে। কারণ আইফোনের বেশিরভাগই তৈরি হয় চীনে। তেমনি বিভিন্ন যন্ত্রাংশ আমদানি করে অন্য দেশ থেকেও।
রিপোর্ট বলছে, আইফোন ১৬ প্রো ২৫৬ জিবি ভার্সনের একটি ফোনের পার্টসের খরচ ৫৫০ থেকে ৮২০ ডলারের মধ্যে হতে পারে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৬৬ হাজার ৯৩৭ থেকে ৯৯ হাজার ৭৯৭ টাকা। এই খরচ বেড়ে যাওয়ার ফলে প্রোডাক্টের দামও স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে।
টেকইনসাইডসের বিশ্লেষক ওয়েন ল্যাম জানান, চীনকে এখন অতিরিক্ত ব্যয় করতে হচ্ছে, যা অন্য দেশেও দাম বাড়িয়ে দেবে। ফলে গ্রাহকদেরও আইফোন বেশি দামে কিনতে হবে। ভবিষ্যতে একটি আইফোনের দাম ২০০০ ডলারেরও বেশি হতে পারে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২ লাখ ৪৩ হাজার ৩৬৩ টাকা।
বিশ্লেষকদের মতে, এতে ম্যানুফ্যাকচারিং, টেস্টিং এবং অন্যান্য খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ফলে আইফোনে ১৬-এর বেস মডেলের দাম হতে পারে প্রায় ১৫০০ ডলার। বর্তমানে আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্স (১টিবি ভ্যারিয়েন্ট) এর দাম প্রায় ১৫৯৯ থেকে ২৩০০ ডলারের মধ্যে থাকতে পারে। এতটাই দামি একটি ফোন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে।
ট্যারিফ নীতির ফলে অ্যাপল বড় সমস্যার মুখোমুখি। আগে যেমন ডিসকাউন্ট পাওয়া যেত, এবার কোনো ছাড় নেই। নতুন ফিচার, উন্নত প্রসেসর, ব্যাটারি ও ক্যামেরা থাকলেও দাম যে হু হু করে বাড়বে, তা একপ্রকার নিশ্চিত।
একটি আইফোন তৈরিতে সবচেয়ে বেশি খরচ পড়ে রিয়ার ক্যামেরায়, যা জাপানে তৈরি হয়। এর দাম প্রায় ১২৭ ডলার। এছাড়া প্রসেসর আসে তাইওয়ান থেকে ও ডিসপ্লে সাউথ কোরিয়া থেকে। আমেরিকায় তৈরি হয় শুধু মেমোরি চিপ। অতএব এই ট্যারিফ পলিসি না বদলালে ভবিষ্যতে আইফোন কিনতে গেলে অনেক বেশি টাকা খরচ করতে হতে পারে। সাধারণ মানুষের জন্য এই দাম অনেকটা চ্যালেঞ্জের।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে