নিজস্ব প্রতিবেদক : মুন্সীগঞ্জে শান্তিপূর্ণভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহা অষ্টমী স্নান উৎসব পালিত হয়েছে। গতকাল শনিবার ভোর ৫টা থেকে বিকেল পর্যন্ত সদর উপজেলার হাটলক্ষীগঞ্জ সংলগ্ন ধলেশ্বরী নদীর তীরে এ অষ্টমী স্নান উৎসব পালন করা হয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তিথি অনুযায়ী পাপমোচন ও পুণ্যলাভের আশায় প্রতিবছর এ স্নান উৎসব পালন করেন।
দেশের বৃহৎ অষ্টমী স্নান লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদের সাথে মিল রেখে জেলা শহরের হাটলক্ষীগঞ্জ ধলেশ্বরী নদীর তীরে এ স্নান উৎসব পালন করা হয়। গতকাল শনিবার ভোর থেকে ধলেশ্বরী নদীর তীরে ঐতিহ্যবাহী স্নানোৎসবে অংশ নিতে নদীতীরে উপস্থিত হন হাজারও পুণ্যার্থী। সনাতন ধর্মের তিথি অনুসারে চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে পুণ্য স্নান করেন সনাতনীরা। এতে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ স্নান করতে এসেছেন। স্নানের পর পুরোহিতের কাছে মন্ত্রপাঠ করে নদীতে ফুল, ফল ভাসিয়ে দিচ্ছেন পুণ্যার্থীরা।
অষ্টমী স্নান উপলক্ষে নদীর তীরে বিভিন্ন প্রস্তুতি নিয়েছে স্নানোৎসব কমিটি। ব্যাপক নিরাপত্তায় রয়েছেন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটও। অষ্টমী স্নানকে কেন্দ্র করে হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকায় বসেছে গ্রামীণ মেলা। মেলাতে বিভিন্ন রকমের খাবার ও ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য খেলনার দোকান রয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা পুণ্যার্থীরা স্নান শেষে বিভিন্ন ধরনের খাবার ও বাচ্চাদের জন্য নানা রকমের বাহারি খেলনা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
ধলেশ্বরী নদীর পাড়ে স্নান করতে আসা একাধিক পুণ্যার্থী জানান, প্রতিবছর এ স্নান উৎসবটি চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথিতে হয়ে থাকে। তিথি অনুযায়ী পাপমোচন ও পুণ্যলাভের আশায় আমরা এখানে স্নান করতে এসেছি। বহু বছর আগে থেকে এই স্নান উৎসবটি এখানে পালন করা হয়ে থাকে।
এ ব্যাপারে জেলা হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট অজয় কুমার চক্রবর্তী জানান, প্রতিবছর চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথিতে লাঙ্গলবন্দ ব্রহ্মপুত্র নদে পুণ্য স্নানার্থে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভক্তপ্রাণের আগমন ঘটে। এসময় ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান খুবই পুণ্যের। এ স্নানে ব্রহ্মার সন্তুষ্টি লাভ করে পাপমোচন হয়। নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে সবচেয়ে বড় মহাঅষ্টমী স্নান উৎসব পালিত হয়। বহু বছর ধরে মুন্সীগঞ্জের ধলেশ্বরী নদীর তীরে একইভাবে এই স্নান উৎসবটি পালন করা হয়।
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম. সাইফুল আলম (পিপিএম) জানান, ধলেশ্বরী নদীর তীরে শান্তিপূর্ণভাবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অষ্টমী স্নান উৎসব পালিত হয়েছে। এর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখায় ভোর পাঁচটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। উৎসবমুখর পরিবেশেই মহা অষ্টমী স্নান উৎসবটি পালন করা হয়েছে।