বিভিন্নজনের এনআইডি ও ছবি দিয়ে একাই নিলেন ৩০ জনের নামে ঋণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রতারণা করে এনআইডির ফটোকপি ও ছবি কালেকশন এবং বিভিন্নজনের স্বাক্ষর জাল করে দিঘীরপাড় অগ্রণী ব্যাংক শাখা থেকে ৩০টিরও বেশি ঋণ নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে এলাকার জামাল মুন্সীর বিরুদ্ধে। জামাল মুন্সী কিছুদিন আগে মৃত্যুবরণ করেছে।
টঙ্গীবাড়ি উপজেলার অগ্রণী ব্যাংক দিঘীরপাড় শাখার এক কর্মকর্তা গত ১৬ জুলাই কামারখাড়া ইউনিয়নের বেশনাল গ্রামে গিয়ে নূরুল হক মৃধার স্ত্রী জাহানারা বেগমকে বলেন, আপনার নামে আমাদের ব্যাংকে ঋণ আছে। আপনি ব্যাংকে গিয়ে দেখা করবেন। এ কথা শুনে সহজ সরল মহিলার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। তিনি শুধু বলেন, আমি কোনো ঋণ আনিনাই। ব্যাংক কর্মকর্তার নামও জিজ্ঞাসা করতে সাহস পাননি সেই বয়স্ক মহিলা শাহনাজ বেগম। তিনটি রাত তার অমানসিক যন্ত্রণায় কাটে।
রোববার ব্যাংক খুললে পাশের বাড়ির মিনারার মাকে নিয়ে যান ব্যাংকে। ব্যাংকে গিয়ে দেখেন ওই কর্মকর্তা আসেননি, অপেক্ষা আর যন্ত্রণা আরো দীর্ঘ হয়। পরেরদিন সোমবার আরেক প্রতিবেশী গিয়াসউদ্দিন মুন্সীকে নিয়ে ব্যাংকে যান। সেখানে ব্যাংক কর্মকর্তা ফারুক তাদের অসহযোগিতা করেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ফারুক বলেন, আপনার নামে ঋণ, ঋণ শোধ করবেন। ঋণের কাগজপত্র দেখাতে, এমনকি ফোন নাম্বার দিতে অস্বীকৃতি জানান। অসহায় দরিদ্র মহিলা এখন দিশেহারা হয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন একটু সহযোগিতার আশায়।
সরেজমিনে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে যাওয়া হয় অগ্রণী ব্যাংক দিঘীরপাড় শাখায়। গিয়ে দেখা যায়, জামাল মুন্সী নামে এক লোকের নামের জায়গার পর্চা রেকর্ড জমা দিয়ে জাহানারার নামে ৪০ হাজার টাকা ঋণ নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ফারুক সাহেব যখন খাতা খুলে দেখান তখন দেখা যায় জামাল মুন্সী এমন অন্যের নাম ব্যবহার করে ৩০টিরও বেশি ঋণ নিয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদের কার্ড করতে ছবি ও এনআইডি কার্ডের ফটোকপি প্রয়োজন বলে একাধিক লোক থেকে তা সংগ্রহ করে এবং জাল স্বাক্ষর দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলে ঋণ নেয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জামাল মুন্সীর ছেলে মনির মোবাইল ফোনে জানান, আমার বাবা যেহেতু ঋণ নিয়েছেন, আমরা এই ঋণের টাকা পরিশোধ করে দেবো। এ বিষয়ে লোন সেকশনের কর্মকর্তা ফারুক জানান, ৩০ জনের মতো লোকের নামে ঋণ দেয়া হয়েছে এই শাখা থেকে যার সব দায়দায়িত্ব জামাল মুন্সীর।
এ বিষয়ে দিঘীরপাড় অগ্রণী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মহিউদ্দিন ইসলাম জানান, বিষয়টি তৎকালীন সময় ব্যাংকের যারা দায়িত্বে ছিল তাদের। বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনাদের মাধ্যমে জানলাম বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।