আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও ৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সোমবার ভোর থেকে চালানো হামলায় তারা নিহত হন। মঙ্গলবার গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মোহাম্মদ বাশাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে নাসের হাসপাতালের কাছে সাংবাদিকদের তাবুতে ইসরায়েলি বোমা হামলায় তিন সাংবাদিক নিহত হন। চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজা নগরী ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় ইসরায়েলের কড়াকড়ি আরোপের ফলে ৬ লাখ ২ হাজার শিশু পোলিও টিকা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় স্থায়ী স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে।
অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত রোববার তুরমাস আইয়ায় ইসরায়েলি বাহিনী ১৪ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি-আমেরিকান কিশোর ওমর মোহাম্মদ রাবেয়াকে গুলি করে হত্যা করেছে।
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় বড় আকারের বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করেছে। শুধু তাই নয়, ক্রমাগত নিজেদের নিয়ন্ত্রণ সম্প্রসারণ করে চলেছে দখলদার ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত এই উপত্যকার ৫০ শতাংশ অংশ দখলে নিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। এতে নিজ ভূমিতে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছেন অধিকাংশ ফিলিস্তিনি। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতায় এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার ৬৯৫ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু।
গাজাকে এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে ইসরায়েল। যতদূর চোখ গেছে চোখের সামনে যা কিছু পেয়েছে ধ্বংস করা হয়েছে। যেখানেই কোনো ধরনের নড়াচড়া চোখে পড়েছে, গুলি করে তা স্তিমিত করে দেওয়া হয়েছে। ফিলিস্তিনিরা যেন আর কোনোদিনই এখানে ফিরতে না পারেন সেই ব্যবস্থাই করেছে ইসরায়েলি সেনারা।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাদের চালানো গণহত্যার বিবরণ এটি। পরিচয় গোপন করে নিজেদের অপরাধের এই স্বীকারক্তি দিয়েছে কয়েকজন ইসরায়েলি সেনা।
শুধু তাই নয়, বাফার জোনকে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করার ‘কিলিং জোনে’ পরিণত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের ট্যাঙ্ক স্কোয়াডে থাকা এক সেনা কর্মকর্তা। ট্যাঙ্কগুলোর ৫০০ মিটারের মধ্যে কেউ এলেই তাকে গুলি করা হতো, হোক সে নারী বা শিশু।
হতভাগ্য ফিলিস্তিনিরা জানেনও না ঠিক কোন পর্যন্ত এই বাফার জোনের বিস্তৃতি। না জেনেই হয়তো প্রবেশ করে ফেলেন মরণ ফাঁদে। ওই সেনাদের অনেকেই ৭ অক্টোবরের হামলার প্রতিশোধ নিতে এভাবে বেসামরিক মানুষগুলোতে মেরেছে বলেও কাঁপা গলায় স্বীকার করেছেন ওই সেনা।
দখলদারদের হামলায় একদিনে নিহত আরও ৬০ জন
আগের পোস্ট