মোঃ আমিরুল ইসলাম নয়ন : মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ৯ জন আহত হয়েছে। এসময় ৮টি বসতঘরে হামলা, ভাঙচুর এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে ভুক্তভোগীরা জানায়।
গত শনিবার দুপুর ৩টা থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের মার্ডারের চর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহতরা হলো- হুমায়ুন গ্রুপের জুবায়ের (২৩), আলী আক্কাস ( ৫০), দীপু (২৬), ইউসুফ (২৯), ফয়সাল (২৭), মাহিনূর (২৮) ও শাহিন (২১)। অন্যদিকে মাহফুজ গ্রুপের সুমন (৩৬) ও আনোয়ার (৪৫)।
স্থানীয় কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হোসেন্দী ইউনিয়নের মার্ডারের চর গ্রামের হুমায়ূন গ্রুপের সাথে চর বলাকী গ্রামের মাহফুজ প্রধান গ্রুপের বিরোধ চলছিল। আধিপত্য বিস্তারের জেরে ২০১৬ সালের ১৪ জুলাই চর বলাকী গ্রামে একদিন পাঁচজনকে খুন করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষের দিকে হওয়ায় বিষয়টা নিয়ে বাদী-বিবাদী উভয়পক্ষই তৎপর হয়ে উঠেছে। হুমায়ূন গ্রুপের লোকজনের সাথে বাদীপক্ষের এবং মাহফুজ প্রধান গ্রুপের সাথে বিবাদীপক্ষের সখ্যতা রয়েছে। এদিকে গত শনিবার মার্ডারের চর গ্রামের হুমায়ূন তার গ্রুপের লোকদের খাওয়ানোর জন্য তার বাড়িতে আয়োজন করে। সেখানে হামলা চালায় মাহফুজ গ্রুপের লোকজন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হুমায়ূনের বড় ভাই মোহাম্মদ লিটু বলেন, দুপুর ৩টার দিকে আমাদের লোকজন যখন খেতে বসেছে তখন মাহফুজ গ্রুপের ৬০/৭০ জন লোক আমাদের উপর হামলা চালায়। তাদের সবার হাতে দেশীয় অস্ত্র ছিল। হামলায় আমাদের সাতজন লোক আহত হয়। অতর্কিত হামলায় আমাদের লোকজন ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এই সুযোগে তারা ৮/৯টি বাড়িঘরে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে মূল্যবান মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। হামলাকারীরা আমি আমার একটি বসতঘরসহ, হুমায়ূন, সুমন, সোহেল, দীপু, আসাদুজ্জামান ও আনিসের বসতঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। কি পরিমাণ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে তা পরে জানাতে পারবো।
এ বিষয়ে জানতে মাহফুজ প্রধানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এদিকে হামলায় আহত মাহফুজ গ্রুপের আনোয়ার হোসেনের সাথে কথা বলতে হাসপাতালে যাওয়া হলে তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ খন্দকার আরশাদ কবির বলেন, এ ঘটনায় সুমন ও আনোয়ার নামে দুইজন রোগী আমাদের হাসপাতালে এসেছে। তাদের মধ্যে সুমনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আনোয়ারকে এই হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।
এদিকে হুমায়ূন গ্রুপের আহতরা নারায়ণগঞ্জের মদনপুর এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানা গেছে।
গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমি নিজেও ঘটনাস্থলে রয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত। বিস্তারিত পরে বলতে পারব।
গজারিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৯ ; ৮টি বসতঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ
আগের পোস্ট